শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২২ পূর্বাহ্ন

ভ্যাপসা গরমে হাঁপিয়ে উঠছে মানুষ

ভ্যাপসা গরমে হাঁপিয়ে উঠছে মানুষ

স্বদেশ ডেস্ক: রাজশাহীসহ সারা দেশে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রচণ্ড গরমে হাঁপিয়ে উঠছে মানুষ। প্রাণীকুলও অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে কম। বর্তমানে বাতাস পর্যাপ্ত জলীয়বাষ্প পাচ্ছে না। ফলে মেঘের সৃষ্টি হচ্ছে না। বাতাসে যে পরিমাণ হলে বৃষ্টি হয় সে পরিমাণ জলীয়বাষ্প নেই। এতে বৈশাখে যে পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার কথা সে পরিমাণ হচ্ছে না।

গেল কয়েকদিন থেকে টানা তাপপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। মাঠের কৃষাণ, খেটে খাওয়া মানুষ বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। রমজানের শেষের দিকে এসে রোজাদাররাও গরমে হাঁপিয়ে উঠছেন। শহরের রিকশাচালক, পথচারি, মার্কেটগুলোর ব্যবসায়ীরা এই সময় চরম পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন। ঈদের কেনাকাটা করতে আসা সাধারণ মানুষও ভ্যাপসা গরমের কাছে পরাজিত হচ্ছে। অনেকেই মার্কেটে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। গেল সোমবার বগুড়া শহরের আলতাফ আলী মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা তিন নারী গরমে হঠাৎই চেতনা হারিয়ে ফেলেন। কাপড় ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল মানবজমিনকে জানান, এর আগেও বৈশাখ মাসে গরম ছিল। এবারের মতো তীব্র গরম এর আগে কখনো অনুভূত হয়নি।
বগুড়ার শিবগঞ্জ এলাকার কৃষক জয়নাল উদ্দিন বলেন, এখন মাঠে কাজ করা জুলুম হয়ে পড়েছে।
আভিজাত রেস্টুরেন্ট ‘পদ্মা ফুডস’র পরিচালক এমদাদ আহমেদ বাবু বলেন, হঠাৎ তীব্র গরম বেড়ে যাওয়ায় রোজাদাররা দিনের শেষের দিকে নার্ভাস হয়ে পড়ছেন। ইফতারে রেস্টুরেন্টে নানা ধরনের শরবতের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইফতার করতে আসা লোকজন ঠাণ্ডা পানীয়ের ওপর অনেকটা নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন। ডাব বিক্রেতা আকরাম হোসেন মানবজমিনকে বলেন, রমজানে এমনিতেই ডাবের চাহিদা বেশি ছিল। এরপর কয়েকদিনের তীব্র গরমে সেই চাহিদা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে তীব্র গরমে হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে। শিশু এবং বয়স্ক মানুষের প্রতি সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন। বিশেষ করে এই সময় কলেরা, ডায়রিয়া, হিট স্ট্রোক হতে পারে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের চিকিৎসক আব্দুস সামাদ মানবজমিনকে গরমের প্রধান সমস্যা হচ্ছে মানুষ প্রচুর ঘেমে যায়। অতিরিক্ত ঘাম থেকে পানি এবং লবণশূন্যতা হতে পারে। এ সময় যদি ছাতা ছাড়া মানুষ বের হয় তাহলে অতিরিক্ত গরমে হিট স্ট্রোক হতে পারে। চিকিৎসা এ সময় টাটকা খাবার, ঠাণ্ডা পানি, ডাবের পানি, স্যালাইন পানি বেশি করে খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে এক সময় প্রচুর নদ-নদী খাল-বিল-নালা ছিল। এসব নালাতে বছরব্যাপী কমবেশি জলরাশি ছিল। কালের আবর্তে এসব নদ-নদী খাল-বিলের বেশির ভাগ হারিয়ে গেছে। নদীগুলো দখল আর দূষণে নষ্ট হয়ে গেছে। অধিকাংশ নদী এখন মৃত। শুষ্ক মৌসুমে পানিশূন্য হয়ে থাকে। ফলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ দিন দিন কমে যাচ্ছে। আর বৃষ্টি না হওয়াতে আবহাওয়ার পরিবর্তনে এমন ভ্যাপসা গরম দেখা দিয়েছে।
আবহাওয়াবিদ সজীব হোসাইন মানবজমিনকে বলেন, রাজশাহী বিভাগে বর্তমানে তাপমাত্রা ৩৭ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেই ওঠানামা করছে। এটিকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা যেতে পারে। হঠাৎ আবহাওয়া এতো গরম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাতাসে বর্তমানে আর্দ্রতার পরিমাণ খুব কম। ফলে তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলেও ভ্যাপসা গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। মানুষের শরীরের ঘাম সহজে শুকাচ্ছে না। এতে মানুষ অস্বস্তিতে পড়ছেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877